র্ভধারণ করা কিংবা মা হতে চলা প্রত্যেক নারীর জীবনে একটি অপূর্ব ব্যাপার। বাইরে থেকে দেখতে যতোটা গোছানো মনে হয়, ভেতরে ভেতরে একজন নারী যথেষ্ট যন্ত্রণার মাঝে থাকেন এ সময়। স্বামী কিংবা সঙ্গী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যথেষ্ট সাহায্য ও সহমর্মিতার প্রয়োজন হয় একজন নারীর। চলুন জেনে আসা যাক এমন কিছু টিপসের ব্যাপারে যেগুলো আপনি আপনার গর্ভবতী স্ত্রী কিংবা বন্ধু ও আত্মীয়দের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেন।
শরীরের আকৃতি পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর দেহের আকার পরিবর্তিত হবে এটিই স্বাভাবিক যেহেতু তিনি একজন শিশুকে বহন করছেন। এহেন অবস্থায় কখনো তাকে কটাক্ষ কিংবা উপহাস করবেন না। বরং তাকে ভালোবাসুন ও প্রশংসা করুন। 
ভুলে যাওয়ার অভ্যাস
গর্ভধারণ করলে একজন নারীর ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে শান্ত ব্যবহার করুন তার সাথে। একবার সন্তান জন্মলাভের পর তিনি আবার আগের হালে ফেরত আসবেন। ভরসা রাখুন। 
বদলে যাওয়া হরমোনকে কোন ইস্যু বানাবেন না
একজন গর্ভবতী নারী অল্পতেই আবেগী হয়ে যান। এটি হরমোনের কারণে। আপনি এবং তিনি কিন্তু সেটা ভালো করেই জানেন। সুতরাং, এটিকে আলোচনার বিষয়বস্তু বানানোর কোন দরকার নেই। বরং তিনি যেমনই বোধ করছেন, তার সাথে সায় দিন।
তিনিই সঠিক
জীবনের এ পর্যায়ে তর্ক ও ঝগড়া থেকে দূরে থাকাই সমীচীন। তিনি যে মতামতই দেন না কেন, সেটির সঙ্গে সম্মতি প্রদান করুন। যদি আপনি সম্মত না-ও হয়ে থাকেন, নম্রভাবে বিষয়টি বোঝান। তর্কাতর্কির কোন দরকার নেই।
তিনি ভীত
গর্ভাবস্থায় একজন নারী প্রতিটা মুহূর্ত অজানা কোন কারণে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে থাকেন। তাকে সামলে রাখুন। কোন রকম আঘাত ও ভয় পাচ্ছেন কী না, খেয়াল রাখুন। যেকোন নেতিবাচক ছবি, গল্প, বই এমনকি মানুষ থেকেও দূরে রাখুন।
তার কথা শুনুন
গর্ভাবস্থার শেষের দিকে যেকোন সময় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে তার অনুরোধ মানুন। তিনি যখনই অসুস্থ বোধ করবেন, চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। ইতস্তত বোধ করার কিংবা দেরি করার কোন অবকাশ রাখবেন না।
তিনি যা-ই চাচ্ছেন, তা-ই খেতে দিন 
একজন গর্ভবতী মহিলার ঘন ঘন খাবারের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে তাকে ভালোমত খেতে দিন। বার বার করে হালকা স্ন্যাক এবং নাস্তা দিন। বেশি করে ফল এবং সব্জি খাওয়ান। কোনভাবেই তাকে অভুক্ত রাখা যাবে না। 
শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকুন
জ্বি, এ সময়টাতেই আপনাকে ধৈর্য পরীক্ষা দিতে হতে পারে। তার অসম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক বা প্রলুব্ধকরণ থেকে বিরত থাকুন। তাকে নিজের মতো থাকতে দিন এবং সাধ্যমত তার যত্ন নিন। 
স্পর্শকাতর অঙ্গ বারবার স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর স্তনযুগল বড় আকার ধারণ করে। তার মানে এই না আপনি তাকে বারবার বিরক্ত করবেন। আবারো বলছি, তাকে তার মতো থাকতে দিন। তাহলেই সবখানে শান্তি বজায় থাকবে।
আপনাকে এখন তার প্রয়োজন নেই, তাকে বালিশে ঘুমোতে দিন
একজন গর্ভবতী নারীর সঙ্গী বা স্বামীকে যতোটুকু প্রয়োজন, তার চাইতেও তার প্রয়োজন এখন বালিশ এবং অনেক আরাম। তাকে আরাম করতে এবং ঘুমোতে দিন। হুটহাট করে তাকে জাগিয়ে তুলবেন না। কোন প্রয়োজন নেই সেটির।
তিনি একজন মানুষ, ভঙ্গুর কাঁচের মতো ব্যবহার করার দরকার নেই তার সাথে
অনেক সময় গর্ভবতী নারীরা তার স্বামী কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বলে ওঠেন যে, 'আমি কোন রাজকন্যা নই। আমাকে আমার মতন থাকতে দাও দয়া করে'। যদি আপনি চান যে তিনি নীরব ও চুপচাপ থাকুন, তবে তাকে মেনে চলুন। 
অলসতা করা
হ্যাঁ, গর্ভবতী নারীরা অলস হয়েই থাকেন। কারণ তিনি আপনারই সন্তান বহন করছেন। সুতরাং তাকে বিচার দেওয়ার আগে কিংবা ভুল বোঝার আগে তার পরিস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করুন আগে। 
অভিযোগ করবেন না
কোনরকম অভিযোগ করার দরকার নেই তার বিরুদ্ধে। বরং তিনি যে বিষয়গুলো নিয়ে অভিযোগ করেন, সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করুন। আপনি ঠকবেন না। 
পরিশেষে, তাকে ভালোবাসুন। তিনি আপনার অনাগত সন্তান বহন করছেন অপরিসীম কষ্ট সহ্য করে, সেটি মাথায় রাখুন। 
শুভকামনা সকল হবু মায়েদের। 
সূত্র: হাফিংটন পোস্ট