আসসালামু আলাইকুম

SSC পরিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে পরিক্ষা দিন এর জন্য আমি দোয়া করছি। সেই সাথে আমার ব্লগে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

May 11, 2014

হিজরী সনের গুরুত্ত


হিজরি সনের গুরুত্ব

মানুষ তার জীবনের বিশেষ দিনগুলোকে স্মৃতি হিসেবে পালন করার জন্য বিভিন্নভাবে দিন, মাস ও সময় গণনা করে থাকে। চন্দ্র ও সূর্য উভয়টির মাধ্যমে সন-তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়ে থাকে।

হিজরি সাল প্রবর্তনের পূর্বে আরবরা তাদের বিভিন্ন স্মরণীয় ঘটনার ওপর নির্ভর করে দিন গণনা করতেন।

উমর (রা.) এর যুগে একটি নির্দিষ্ট তারিখ হিসাব করার দরকার হলে আলীসহ (রা.) কয়েকজন সাহাবির পরামর্শে একটি নির্দিষ্ট সন গণনার পরামর্শ করা হয়। এতে কেউ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম থেকে সাল গণনা করার কথা বলেন, কেউ বা তার ওপর ওহি নাহিলের দিন থেকে, কেউ তার ওফাত দিবস থেকে সাল গণনা করার অভিমত ব্যক্ত করেন। কিন্তু উমর (রা.) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের ঘটনা থেকে সাল গণনার প্রস্তাব উত্থাপন করেন, এতে সব সাহাবি ঐক্যমত পোষণ করেন। কেননা, হিজরত সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে।

আল-উকদুদ দিরায়া নামক গ্রন্থে রয়েছে-ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর (রা.)-এর শাসনামলে উমর (রা.)-এর কাছে একটি চুক্তিপত্র আনা হয়। সেখানে শাবান মাসের কথা উল্লেখ ছিল। তখন উমর (রা.) বললেন, এটা কি গত শাবান না আগামী শাবান মাস? অতঃপর তিনি তারিখ গণনার নির্দেশ দিলেন এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মদীনায় হিজরতকে কেন্দ্র করে হিজরি সন গণনার সূচনা করেন। এসময় মুহাররমকে প্রথম মাস হিসেবে গণ্য করা হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরত করেন ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জুলাই। সেই দিনকে মুহাররম মাসের শুক্রবার হিসেবে ধরে হিজরি সাল গণনা শুরু হয়। উক্ত হিজরি হিসেবের প্রথম প্রয়োগ ঘটে উমর (রা.)-এর শাসনামলের ৩০ জমাদিউল উখরা/ ১৭ হিজরি অর্থাৎ ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দের ১২ জুলাই থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় আজও হিজরি সন চলে আসছে। হিজরি সন গণনার পূর্বে আরবরা আরবি মাসগুলো ব্যবহার করতেন। অন্যান্য সব সনের মতো হিজরি সনেও ১২টি মাস রয়েছে। কেননা, আল্লাহর কাছেও ১২ মাসে এক বছর। যেমন, তিনি ঘোষণা করেন, নিশ্চই আকাশ মণ্ডলি ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট মাস গণনার বারোটি মাস, তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। (সূরা তাওবাহ; আয়াত-৩৬)

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হিজরত করেন তখন ছিল রবিউল আউয়াল মাস। প্রশ্ন দেখা দেয়, তাহলে ওই মাসে না হয়ে মুহররম মাস প্রথম মাস হলো কীভাবে? মহাগ্রন্থ আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনার মাস বারোটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। কাজেই এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। (সূরা তাওবাহ; আয়াত-৩৬)

এ আয়াতের চারটি সম্মানিত মাসকে চিহ্নিত করতে গিয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের সময় মিনা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে বলেন, তিনটি মাস হলো জিলকদ, জিলহজ ও মুহররম এবং অপরটি হলো রজব। (তাফসীর ইবনে কাসির)

এ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফী (র.) তার বিখ্যাত গ্রন্থ তাফসিরে মাআরেফুল কুরআনে লিখেছেন- উপরোক্ত আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে মাসের যে ধারাবাহিকতা ইসলামী শরিয়তে প্রচলিত রয়েছে, তা মানব রচিত নয়; বরং মহান রাব্বুল আলামীন যেদিন আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন সেদিনই মাসের তারতিব ও বিশেষ মাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হুকুম-আহকাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এ আয়াত দ্বারা আরো প্রমাণিত হয় যে আল্লাহর দৃষ্টিতে শরিয়তের আহকামের ক্ষেত্রে চন্দ্র মাসই নির্ভরযোগ্য। চন্দ্র মাসের হিসাব মতেই রোজা, হজ ও জাকাত প্রভৃতি আদায় করতে হয়। তবে কুরআন মজিদ চন্দ্রকে যেমন, তেমনি সূর্যকেও সাল তারিখ ঠিক করার মানদণ্ডরূপে অভিহিত করেছেন। সুতরাং চন্দ্র ও সূর্য উভয়টির মাধ্যমেই সাল-তারিখ নির্দিষ্ট করা জায়েজ। তবে চন্দ্রের হিসাব আল্লাহর নিকট অধিকতর পছন্দনীয়। তাই শরিয়তের বিধি-বিধানকে চন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রেখেছেন। এজন্য চন্দ্র বছরের হিসাব সংরক্ষণ করা ফরজে কেফায়া। সকল উম্মত এ  ভুলে গেলে সবাই গোনাহগার হিসাবজ গণ্য হবে। চাঁদের হিসাব ঠিক রেখে অন্যান্য সূত্রে হিসাব ব্যবহার করা জায়েজ আছে।

এ আয়াতের তাফসিরে আল্লামা ইমাম বাগাভি (রহ.) তার গ্রন্থ তাফসিরে বাগাভিতে উল্লেখ করেছেন-বারো মাস হলো- মুহাররম, সফর, রবিউল আউয়াল, রবিউস ছানি, জমাদিউল আউয়াল, জমাদিউস সানি, রজব, শাবান, রমজান, শাওয়াল, জুলকদ ও জুলহজ। আর হারাম বা সম্মানিত চারটি মাস হলো- মুহররম, রজব, জুলকদ ও জুলহজ। (তাফসিরে বাগাভি, ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা নং-৪৪)

মুহাররম: মহররম-এর অর্থ হলো পবিত্র, সম্মানিত। যেহেতু, এটি হারাম মাসের একটি। তাই একে মুহাররম হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।

সফর: সফর শব্দের অর্থ খালি হওয়া। কেননা, হারাম মাস, মুহাররমের পরে সবাই ঘর ছেড়ে যুদ্ধে বের হতো, তাই একে সফর বা খালি নামে নামকরণ করা হয়েছে।

রবিউল আউয়াল ও রবিউস সানি: এ দুই মাস নামকরণের সময় রবি তথা বসন্তকালে এসেছে। তাই এ দুই মাসকে প্রথম বসন্ত ও দ্বিতীয় বসন্ত অর্থাৎ রবিউল আউয়াল ও রবিউস সানি নামে ন

No comments :

Post a Comment