আসসালামু আলাইকুম

SSC পরিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে পরিক্ষা দিন এর জন্য আমি দোয়া করছি। সেই সাথে আমার ব্লগে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

Jul 3, 2014

পৃথিবীর বিখ্যাত ১০ টি স্থাপত্য যেগুলো অবশ্যই একবার দেখা উচিৎ

রহস্যে ভরা এই পৃথিবী যেমন প্রাকৃতিকভাবে অনেক সুন্দর তেমনি মনুষ্য তৈরি কৃত্রিম অনেক নিদর্শনও সবাইকে প্রতিনিয়তই মুগ্ধ করে চলছে। পৃথিবী বিখ্যাত এমন অনেক স্থাপত্য রয়েছে যেগুলো দেখতে অনেক বেশি সুন্দর এবং মনোরম। আসুন ছবিতে দেখে জেনে নিই এমন ১০ টি বিখ্যাত স্থাপত্যশৈলী।

১. পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার :

ছবিতে দেখুন মনোমুগ্ধকর এই পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার মালোয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থিত। ১৯৯৮ এবং ২০০৮ সালে এই টাওয়ারগুলোই পৃথিবীর সর্বোচ্চ টাওয়ার ছিল। এই সুন্দর টাওয়ারটির ডিজাইন করেছের আর্জেন্টাইন একজন স্থপতি সিজার পেলি। এই উঁচু টাওয়ারটি তৈরির প্রজেক্টটি চালু হয় ১৯৯২ সালে। এর কাজ শুরু হয় ১৯৯৩ সালে এবং শেষ হয় ৭ বছর পরে ২০০০ সালে। টাওয়ারটিতে মোট ৮৮ টি ফ্লোর রয়েছে যেগুলো স্টিল এবং কাঁচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

২. হোয়াইট হাউজ :

আরেকটি মনোরম স্থাপত্য হল এই হোয়াইট হাউজ। এটি ওয়াশিংটন ডিসির উত্তরে ১৬০০ পেনসিলভানিয়া এভিনিউ এর কাছাকাছি অবস্থিত। ১৮০০ সাল থেকে এই হোয়াইট হাউস প্রতিটি ইউএসএ প্রেসিডেন্টের বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই বিল্ডিংটির ডিজাইন করেন আইরিশ স্থপতি জেমস হবান। এটি ১৭৯২ সাল থেকে ১৮০০ সালের মধ্যে ৮ বছরে নির্মিত হয়। এটি নব্যধ্রুপদীশৈলীর একটি বিশেষ নিদর্শন।

৩. সেন্ট বেসিল এর গীর্জা :

সেন্ট বেসিল গীর্জার অফিসিয়াল নাম হল প্রতিরক্ষার গীর্জা। এতে একটি রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ রয়েছে। এটি মস্কোর রেড স্কয়ারে অবস্থিত। এই চার্চটি ১৫৫৫ সাল থেকে ১৫৬১ সালের মধ্যে তৈরি করা হয়। এটি মূলত কাজান এবং আস্ত্রখান এর স্মৃতি রক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে। মস্কোর একেবারে মধ্যবর্তী স্থানে এই স্থাপত্যটি নির্মাণ করা হয় এবং এটি ১৬০০ সালে ইভান গ্রেট বেল তৈরির আগে সর্বোচ্চ বিল্ডিং হিসেবে পরিচিত ছিল। এটির মূল ভবনটি ট্রিনিটি চার্চ যা পরবর্তীতে ট্রিনিটি ক্যাথিড্রাল নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এই সেন্ট বেসিল গীর্জাটি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এর অন্তর্ভূক্ত ছিল।

৪. এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং :

এই দীর্ঘ স্থাপত্যটি নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের মিডটাউনে অবস্থিত। ১০২ তলা বিশিষ্ট আকাশচুম্বী এই এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংটির ছাদ ১২৫০ ফুট উঁচু এবং এর মোট উচ্চতা ১৪৫৪ ফুট। নিউইয়র্কের আঞ্চলিক নাম এম্পায়ার স্টেট এর নামেই এই বিল্ডিংটির নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৩১ সালে এটি নির্মাণ করা হয় এবং ১৯৭২ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নির্মাণের আগে এটিই ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ বিল্ডিং হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমানে এটি ৩য় সর্বোচ্চ ইমারত।

৫. বুর্জ খলিফা :

বুর্জ খলিফা বুর্জ দুবাই নামেও পরিচিত যেটি বর্তমান বিশ্বের সর্বোচ্চ মনুষ্য তৈরি স্থাপত্য যেটির উচ্চতা ৮২৯.৮ মিটার। এই টাওয়ারটি ইউনাইটেড আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত। এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৪ সালে এবং শেষ হয় ২০০৯ সালে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিল্ডিংটি খোলা হয় ২০১০ সালে। ২ স্কয়ার কিলোমিটার জুড়ে এটি অবস্থিত যেটিকে দুবাইয়ের ডাউনটাউন বলা হয়ে থাকে। বুর্জ খলিফার ডিজাইনার হলেন স্কিডমোর, প্রধান স্থপতি আড্রিয়ান স্মিথ এবং প্রধান স্ট্রাকচারাল প্রকৌশলী বিল বাকার। ইউএই প্রেসিডেন্ট খালিজ বিন জায়েদ আল নাহয়ান এই টাওয়ারটির নাম বুর্জ খলিফা দিয়েছিলেন।

   


৬. কোলোসিয়াম :

ইতালিতে অবস্থিত এই কোলোসিয়াম ভবনটি বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর এবং বিখ্যাত একটি ভবন। এর আসল নাম হল অ্যাম্ফিথিয়েট্রাম ফ্ল্যাভিয়াম। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় অ্যাম্ফিথিয়েটার হল এই কোলোসিয়াম বা কোলিসিয়াম। এটি ইতালির একেবারে মধ্যভাগে অবস্থিত। রোমান সা¤্রাজ্যের সময়ে এটি কংক্রিট এবং পাথর দিয়ে নির্মাণ করা হয়। এর আকৃতি মোটামুটিভাবে উপবৃত্তাকার। ৭২ খৃষ্টাব্দে স¤্রাট ভেসপাসিয়ানের সা¤্রাজ্যকালে এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স¤্রাট টিটাসের সা¤্রাজ্যকালে ৮০ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। ভেসপাসিয়ান এবং টিটাস ফ্ল্যাভিয়া বংশোদ্ভুত ছিলেন। এরই নামানুসারে এই ভবনটির মূল নাম অ্যাম্ফিথিয়েট্রাম ফ্ল্যাভিয়াম রাখা হয়। এই থিয়েটারটিতে ৫০০০০ দর্শক আসন আছে। ক্ল্যাসিকাল বিভিন্ন ধরনের নাটক এখনও এখানে প্রদর্শিত হয়ে থাকে।

৭. তাজমহল :

বিখ্যাত ইতিহাস সমৃদ্ধ সুন্দর ভবন তাজমহল শুধু তাজ নামেও বিশ্বে পরিচিত। ভারতের আগ্রাতে এটি অবস্থিত এবং এতে সাদা মার্বেল পাথর নির্মিত একটি সমাধিস্থলও আছে। সম্রাট শাহজাহান তার তৃতীয় স্ত্রী মমতার উদ্দেশ্যে এই বিখ্যাত ভবনটি নির্মাণ করেন। এটি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে সমগ্র বিশ্বে পরিচিত। ইমলামিক, পার্সিয়ান, অটোমান, তুর্কি এবং ভারতীয় সকল স্থাপত্যের নিদর্শন এই তাজমহল। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৬৩২ সালে এবং শেষ হয় দীর্ঘ ২০ বছর পরে। তাজমহল ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এর অন্তর্ভূক্ত হয়।
Ads by OnlineBrowserAdvertisingAd Options

৮. সিডনি অপেরা হাউজ :

বিশ্বে এখনও এমন কিছু আধুনিক ভবন রয়েছে যেগুলো অদ্ভুৎ সব শিল্পনৈপূণ্যে ভরা। তার মধ্যে একটি হল সিডনি অপেরা হাউজ। এটি অস্ট্রেলিয়ার মধ্যমণি সিডনিতে অবস্থিত। অপেরা সিডনি হাউজকে শিল্প ভবন হিসেবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। এটি নির্মাণের প্রথম ধারণা দেন ড্যানিশ স্থপতি জন উৎজন। এটি প্রথম উদ্বোধন করা হয় ১৯৭৩ সালে এবং এতে অনেকগুলো পারফরমেন্স ভেন্যু রয়েছে। প্রতিবছর এখানে ১৫০০ টিরও বেশি অনুষ্ঠান অনিুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং এটি অস্ট্রেলিয়া দর্শনার্থীদের জন্যও অনেক বেশি বিখ্যাত। প্রতিবছর এতে ৭ মিলিয়ন দর্শনার্থী দেখতে আসে। এটি সিডনি অপেরা হাউজ ট্রাস্ট দ্বারাই পরিচালিত এবং ২০০৭ সালে এটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভূক্ত হয়।

৯. বাকিংহাম প্যালেস :

পৃথিবীর সুন্দর স্থাপত্যগুলোর মধ্যে অবশ্যই এই বাকিমহাম প্যালেসের কথা বলতেই হবে। এটি মূলত অফিসিয়াল আবাসিক ভবন এবং ব্রিটিশ রাজকীয়দের কর্মস্থল। এটি ওয়েস্টমিনস্টার শহরে অবস্থিত এবং ব্রিটিশদের একটি জাতীয় নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। এটি বাকিংহাম হাউজ নামেই বেশি পরিচিত। বাকিংহাম প্যালেসটি দেখতে সত্যিই প্রাসাদের ন্যায় অনেক সুন্দর যেটি মূলত বাকিংহামের ডিউকের জন্যই নির্মাণ করা হয়। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৭০৫ সালে এবং শেষ হয় ১৭৬১ সালে জর্জ ৩য় এর সময়ে। কুইন শার্লট এর ব্যক্তিগত বাসভবন হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। এজন্য এটি রানীর বাসভবন নামেও পরিচিত।

১০. ফ্ল্যাটিরন ভবন :

পৃথিবীর বিখ্যাত স্থাপত্যগুলোর মধ্যে এই ফ্ল্যাটিরন ভবনটি ফুলার ভবন নামেও পরিচিত। দর্শনীয় আকাশচুম্বী এই ভবনটি নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে অবস্থিত। এই দীর্ঘ ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯০২ সালে এবং এট পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে উঁচু ভবনগুলোর মধ্যে একটি।

No comments :

Post a Comment