আসসালামু আলাইকুম

SSC পরিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে পরিক্ষা দিন এর জন্য আমি দোয়া করছি। সেই সাথে আমার ব্লগে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

Jun 24, 2014

পতাকার ইতিহাস

পতাকার অনুপাত ৩:৫

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্ত। সবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক, বৃত্তের লাল রং উদিয়মান সূর্য, স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার এই রূপটি ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারীভাবে গৃহীত হয়। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধেব্যবহৃত পতাকার উপর ভিত্তি করে এই পতাকা নির্ধারণ করা হয়, তখন মধ্যের লাল বৃত্তে বাংলাদেশের মানচিত্র ছিল, পরবর্তীতে পতাকাকে সহজ করতেই, মানচিত্রটি বাদ দেয়া হয়।


বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, জাপানের জাতীয় পতাকার সাথে মিল রয়েছে, কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে বাংলাদেশের সবুজের স্থলে, জাপানীরা সাদা ব্যবহার করে। লাল বৃত্তটি একপাশে একটু চাপানো হয়েছে, পতাকা যখন উড়বে তখন যেন এটি পতাকার মাঝখানে দেখা যায়।

আদি পতাকাটি এঁকেছিলেন স্বভাব আঁকিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ছাত্রনেতা শিবনারায়ন দাশ। ২রা মার্চ ৭১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা প্রদর্শিত হয়। ২রা মার্চ ’৭১ পূর্বাহ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনের মূল ভবনের মূল প্রবেশদ্বারে গাড়ি বারান্দাকে পূর্ব নির্ধারিত সভা মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ছাত্র জনতার উপস্থিতি ছিল প্রচুর। সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধুর চার খলিফা খ্যাত ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন অন্য তিন নেতা আঃ কুদ্দুস মাখন, আঃ স. ম. রব, শাহাজাহান সিরাজসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র নেতৃবৃন্দ। প্রথমে সভায় প্রথম বক্তব্য ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক আবদুর রশিদ। দ্বিতীয় বক্তব্য শাজাহান সিরাজ ভাষণ দানরত অবস্থায় একটি মিছিলে থেকে আওয়ামী লীগের জনৈক ছাত্র নজরুল (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ) জয় বাংলার একটি পতাকা নিয়ে মঞ্চের দিকে এগিয়ে আসেন। নতজানু হয়ে পতাকাটি ডায়াসে তুলে নেন আ স ম রব কিন্তু সে সময় মঞ্চে উপবিষ্ট অন্য তিন ছাত্র নেতৃবৃন্দসহ অন্যরাও দাঁড়িয়ে যান এবং সমবেতভাবে পতাকাটি উর্ধে তুলে ধরেন।

৩রা মার্চ ‘৭১ এ রমনা রেসকোর্স (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ এর পক্ষ থেকে ‘স্বাধীনতার ইস্তেহার’ পাঠ করা হয়। এই ইস্তেহারে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ইস্তেহার পাঠ করেন তৎকালীন ছাত্র নেতা শাহজহান সিরাজ।

২৩শে মার্চ পূর্ব বাংলার প্রতিটি শহরে পাকিস্তান দিবসের অনুষ্ঠান বর্জিত হয় এবং পাকিস্তানের পতাকার পরিবর্তে বাংলাদেশের পতাকা উড়তে দেখা যায়। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার শিবনারায়ন দাশের ডিজাইন কৃত পতাকার মাঝে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ, ও তার ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলে পটূয়া কামরুল হাসানকে। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা

পতাকার মাপ

· বাংলাদেশেরে পতাকা আয়তাকার
· এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ১০:৬ এবং মাঝের লাল বর্ণের বৃত্তটির ব্যাসার্ধ দৈর্ঘ্যের পাঁচ ভাগের এক ভাগ, পতাকার দৈর্ঘ্যের কুড়ি ভাগের বাম দিকের নয় ভাগের শেষ বিন্দুর ওপর অঙ্কিত লম্ব এবং প্রস্থের দিকে মাঝখান বরাবর অঙ্কিত সরল রেখার ছেদ বিন্দু হলো বৃত্তের কেন্দ্র।
· পতাকার দৈর্ঘ্য ১০ ফুট হলে প্রস্থ হবে ৬ ফুট, লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ২ ফুট, পতাকার দৈর্ঘ্যের সাড়ে ৪ ফুট ওপরে প্রস্থের মাঝ বরাবর অঙ্কিত আনুপাতিক রেখার ছেদ বিন্দু হবে লাল বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দু।

পতাকা ব্যবহারের মাপ :

· ভবনে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো—১০ ফুট ৬ ফুট, ৫ ফুট ৩ ফুট, ২.৫ ফুট ১.৫ ফুট।
· মোটরগাড়িতে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো—১৫ ইঞ্চি ৯ ইঞ্চি, ১০ ইঞ্চি ৬ ইঞ্চি।
· আন্তর্জাতিক ও দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য টেবিল পতাকার মাপ হল—১০ ইঞ্চি ৬ ইঞ্চি

No comments :

Post a Comment