বাংলাদেশে নকল ডিম কেনার ও খাওয়ার অভিজ্ঞতা অনেকের হয়েছে। চীন থেকে আসা বিপুল পরিমাণ নকল ডিম ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশে-ভারত-মিয়ানমারসহ আশেপাশের অনেক দেশেই। বিশেষ করে এই রমজানেও একই অবস্থা।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট মর্নিং নিউজ এজেন্সি-সহ বেশ কয়েকটি বিদেশি গণমাধ্যম সম্প্রতি জানিয়েছে, রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ ওই দেশের বিভিন্ন
এলাকায় সীমান্তের চোরাপথে চীন থেকে কৃত্রিম ডিম পাচার হচ্ছে। চোরাপথে সেই ডিম ভারতসহ
আশপাশের অন্যান্য দেশেও সয়লাব হয়েছে নকল ডিমে। যা দেখতে একদম হাঁস-মুরগির মতো।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সাল থেকেই তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম ডিম। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞান সাময়িকী
‘দ্য ইন্টারনেট জার্নাল অফ টক্সোকোলজি’তে কৃত্রিম ডিম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে।
তাতে অবশ্য একথাও বলা আছে যে, কৃত্রিম ডিমে কোন খাদ্যগুন নেই। নেই কোন প্রোটিনও। বরং তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। চীনে তৈরি হওয়া এসব কৃত্রিম বা নকল ডিম এক কথায়
বিষাক্ত। কৃত্রিম ডিম তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বনেট, স্টার্চ, রেসিন,
জিলেটিন মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন এই ধরনের ডিম খেলে স্নায়ুতন্ত্র ও কিডনিতে
সমস্যা হতে পারে। ক্যালসিয়াম কার্বাইড ফুসফুসের ক্যান্সারসহ জটিল রোগের কারণ।
নকল ডিম চেনার উপায়
* কৃত্রিম ডিম অনেক বেশি ভঙ্গুর। এর খোসা অল্প চাপেই ভেঙে যায়।
* এই ডিম সিদ্ধ করলে কুসুম বর্ণহীন হয়ে যায়।
* ভাঙার পর আসল ডিমের মতো কুসুম এক জায়গায় না থেকে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
* কৃত্রিম ডিম আকারে আসল ডিমের তুলনায় সামান্য বড়।
* এর খোলস খুব মসৃণ হয়। খোসায় প্রায়ই বিন্দু বিন্দু ফুটকি দাগ দেখা যায়।
* রান্না করার পর এই ডিমে বাজে গন্ধ হয়। কিংবা গন্ধ ছাড়া থাকে। আসল কুসুমের গন্ধ পাওয়া যায়
না।
* নকল ডিমকে যদি আপনি সাবান বা অন্য কোন তীব্র গন্ধ যুক্ত বস্তুর সাথে রাখেন, ডিমের মাঝে
সেই গন্ধ ঢুকে যায়। রান্নার পরেও ডিম থেকে সাবানের গন্ধই পেতে থাকবেন।
* নকল ডিমের আরেকটি উল্লেখ্যযোগ্য লক্ষণ হলো ডিম দিয়ে তৈরি খাবারে এটা ডিমের কাজ করে
না। যেমন পুডিং বা কাবাবে ডিম দিলেন বাইনডার হিসেবে। কিন্তু রান্নার পর দেখবেন কাবাব ফেটে
যাবে, পুডিং জমবে না।
* নকল ডিমের আকৃতি অন্য ডিমের তুলনায় তুলনামূলক লম্বাটে ধরনের হয়ে থাকে।
* নকল ডিমের কুসুমের চারপাশে রাসায়নিকের পর্দা থাকে, বিধায় কাঁচা কিংবা রান্না অবস্থাতে
কুসুম সহজে ভাঙতে চায় না।
সবমিলে নকল ডিম থেকে সাবধানতার বিকল্প নাই। জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর জন্য সরকারি উদ্যোগও
প্রয়োজন।
No comments :
Post a Comment