আসসালামু আলাইকুম

SSC পরিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে পরিক্ষা দিন এর জন্য আমি দোয়া করছি। সেই সাথে আমার ব্লগে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

Jul 8, 2014

বাংলাদেশ-ভারত বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমার রায়ে তালপট্টি দ্বীপ চলে গেছে ভারতের ভাগে ।

বাংলাদেশ পেয়েছে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার, ‘দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ’ পেল ভারত

 সাতক্ষীরার দক্ষিণে অবস্থিত তালপট্টি দ্বীপের জায়গাটুকু পেল না বাংলাদেশ। সোমবার বাংলাদেশ-ভারত বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমা নিয়ে নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতের রায়ে দ্বীপের অংশটুকু ভারতের ভাগে চলে গেছে। ফলে হাড়িয়াভাঙা নদীর মোহনার অদূরে দক্ষিণ তালপট্টির নিয়ন্ত্রণ হারালো বাংলাদেশ।
এদিকে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপের কোনো অস্তিস্ত্ব বর্তমানে নেই বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমুদ্র বিষয়ক সচিব রিয়ার এডমিরাল অব. মো. খোরশেদ আলম। মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি উপস্থিত ছিলেন
অ্যাডমিরাল খোরশেদ আলম বলেন, ১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের পর হাড়িয়াভাঙ্গা নদীর মোহনার অদূরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ জেগে ওঠে। নদীর মোহনা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান ছিল। ১৯৭৪ সালে একটি আমেরিকান স্যাটেলাইটে আড়াই হাজার বর্গমিটার এ দ্বীপটির অস্তিত্ব ধরা পড়ে। পরে রিমোট সেন্সিং সার্ভে চালিয়ে দেখা গিযেছিল, দ্বীপটির আয়তন ক্রমেই বাড়ছে এবং একপর্যায়েং এর আয়তন ১০ হাজার বর্গমিটারে দাঁড়ায়।
তবে ১৯৮৬ সালের পর থেকে এ দ্বীপের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলেও উল্লেখ করেন খোরশেদ আলম। এমনকি ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার সর্বশেষ যে আদর্শ মানচিত্র প্রস্তুত করা হয় সেখানেও দক্ষিণ তালপট্টির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে দীপু মনি বলেন, বর্তমানে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপের কোনো অস্তিত্ব নেই। সেখানে এখন শুধুই পানি।
তিনি বলেন, দ্বীপটি বাংলাদেশের মানচিত্রে কখনোই ছিল না। কারণ, আন্তর্জাতিক সীমানা চূড়ান্ত করে কোনো আদর্শ মানচিত্রই বাংলাদেশের ছিল না। কোনো সরকারই এ কাজটি করেনি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানাভাবে বাংলাদেশের মানচিত্র তৈরি করেছে। যেখানে তারা কেউই দক্ষিণ তালপট্টিকে নিজেদের সীমানায় আনেনি। বরাবরই তা ঠেলে দিয়েছে ভারতের দিকে।
তিনি বলেন, যদিও সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে ২০১০ সালে সর্বজনসম্মত একটি মানচিত্র তৈরি করা হয়। আন্তর্জাতিক আদালতে এ স্থানটি চেয়ে যুক্তিও দেখানো হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন দক্ষিণ তালপট্টি আমাদের মানচিত্রে না থাকায় আদালত আমাদের যুক্তি গ্রহণ করেননি।
তবে তিনি বলেন, বিলীন হওয়া তালপট্টির ক্ষুদ্র জায়গা ভারত পেলেও এর সমুদ্র নিচের দিকে বিরাট জায়গা আমরা পেয়েছি। এই সীমানা অনেক বেশি।
অন্যদিকে তালপট্টি দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে বিএনপি। এই দ্বীপটি বাংলাদেশের এলাকায় এমন দাবি তুলে ধরে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমল থেকে বাংলাদেশ এই দ্বীপটি আমাদের ভুখণ্ডের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে। অথচ রায়ে এই দ্বীপটি আমাদের সমুদ্র সীমানায় মধ্যে পড়েনি।
সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, সালিশ আদালতের রায়ে আমি কিছু অসঙ্গতি দেখতে পাচ্ছি। সমুদ্রের এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোনে বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়নি।
উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের বিরোধপূর্ণ ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমার মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার। সমুদ্রসীমা বিরোধ নিয়ে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত (পার্মানেন্ট কোর্ট অব আর্বিট্রেশন-পিসিএ) এ রায় দেন। রায়ে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপটি বাংলাদেশের অংশে না থেকে ভারতের অংশে চলে যায়।

No comments :

Post a Comment