আসসালামু আলাইকুম

SSC পরিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে পরিক্ষা দিন এর জন্য আমি দোয়া করছি। সেই সাথে আমার ব্লগে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

May 21, 2014

যত্ম নিলে দন্তক্ষয় রোধ হয়

যত্ম নিলে দন্তক্ষয় রোধ হয়
শিশুর জন্মের ৫-৬ মাস বয়স হতে দুধ দাঁত উঠা শুরু করে এবং আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে ২০টি দাঁতই উঠা শেষ হয়। অস্থায়ী এই দুধ দাঁতগুলো ৫-৬ বছর থেকে ১২-১৩ বছরের মধ্যে পড়ে যায় এবং স্থায়ী দাঁত উঠতে থাকে। উপরোক্ত বয়সসীমার মাঝে শিশুর দাঁতের সঠিক যত্ম এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত। শিশুর দাঁতের সুগঠন শুরু হয় গর্ভকালীন সময় থেকে অর্থাৎ ৪-৬ মাসের দিকে। শিশুর দাঁত, মাড়ি ও চোয়ালের হাড় মজবুত হতে হলে গর্ভাবস্থায় শিশুর মাকে পুষ্টিকর সুষম খাদ্য খেতে হবে যাতে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও খণিজ পদার্থ থাকে। জন্মের পর বেশির ভাগ শিশুর প্রধান খাদ্য তার মায়ের দুধ। এছাড়াও মায়ের দুধের পাশাপাশি বিকল্প দুধ এবং সিরিয়াল জাতীয় খাবার গ্রহণ করে থাকে। প্রতিবার খাওয়ানোর পর শিশুকে অল্প পরিমাণ পানি খাইয়ে দিতে হবে যাতে মুখে দুধ বা অন্য খাবার লেগে না থাকে। অল্প তুলো পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে দাঁত ও মাড়ি মুছে পরিষ্কার করা যায়। বাচ্চার প্রথম দুধ দাঁত উঠতে শুরু হলে খুব নরম ছোট কুচিযুক্ত ব্রাশ দিয়ে দিনে দুইবার দাঁত মাজিয়ে দিতে হবে। ব্রাশের সাথে টুথপেস্ট লাগালে লক্ষ্য রাখবেন এগুলো শিশু যেন গিলে না ফেলে। এই সময় অধিকাংশ শিশুই পেটের নানারকম সমস্যায় ভোগে। তার প্রধান কারণ মুখ ও দাঁত ঠিকমত পরিষ্কার না থাকা। খাওয়ার পর শিশুর দাঁত ও মাড়িতে খাদ্যকণা লেগে থাকে এতে জীবাণু পেটে চলে যায়। ফলে শিশুর পেট ফাঁপা, বদহজম, বমিভাব খাদ্যে অরুচিভাব এবং পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। অন্যান্য সমস্যাও হতে পারে যেমন টনসিলের প্রদাহ, রিউম্যাটিক ফিভার, হাড়ের সাথে সন্ধিতে ব্যথা। অন্যদিকে দাঁতে বারবার সংক্রমণ হওয়ার জন্য শিশু দন্তক্ষয় রোগে আক্রান্ত হয়। ব্যথা হওয়ার জন্য শিশু ঠিকমত খেতে পারে না ফলে অপুষ্টির শিকার হয়। ব্যথা তীব্র হলে শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে ও মানসিক অবসাদ হয়। প্রত্যেক শিশুরই মিষ্টি জাতীয় খাদ্যের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। আঠালো জাতীয় মিষ্টি খাবার যেমন লজেন্স, কেক, বি¯ু‹ট, প্যাস্টি, ক্যান্ডি এগুলো দাঁতে সহজেই লেগে থাকে এবং দন্তক্ষয় বাড়িয়ে দেয়। শিশুকে মুখে দুধের ফিডার দিয়ে ঘুমাতে দিবেন না। যদি শিশু এগুলো করে ফেলে তাহলে খাওয়ার পর অবশ্যই দাঁত-মাড়ি আঙ্গুল দিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেলতে হয়। শিশুকে যতটা সম্ভব মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাওয়ানোর অভ্যাস করা, পরিবর্তে ফলমূল, ডিম, মাছ, মাংস এবং সবজি খাওয়ার দিকে মনোযোগী করা। বাজারের কোল্ড ড্রিংকস শিশুকে দেয়া উচিত নয় তার বদলে ফলের রস বা শরবত খাওয়ানো যায়। শিশুকে কখনই চুষি কাঠি বা আঙ্গুল চুষতে দেয়া উচিত নয় তাহলে উপরের চোয়ালের গঠন খারাপ হতে পারে। বাবা-মার উচিত মাঝে মাঝে বাচ্চার দাঁত-মাড়ি খুঁটিয়ে দেখা। যদি কোন দাঁতে কালো স্পট বা গর্ত দেখা যায়, তাহলে অবশ্যই দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করা। সঠিক সময়ে দন্তক্ষয় রোগ চিকিৎসা না করালে এটা মাড়ি পর্যন্ত আক্রান্ত করে ফেলে। দাঁত দেহের একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অঙ্গ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে ছোটবেলা থেকেই সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত মাজা এবং দাঁতের যত্ন নেয়ার অভ্যাস করা উচিত, তাহলে বড় হয়ে শিশু স্থায়ী দাঁতের যত্ন নিতে শিখবে। আপনার শিশু নিশ্চয়ই আপনার অতি ¯েœহের, আদরের। একটু চেষ্টার দরুন যদি তার দাঁতগুলো সুন্দর ও সুস্থ থাকে তাহলে ছোট ছোট মুক্তার মতো ঝকঝকে দাঁতে টোল পড়া গালে শিশুটি যখন হাসবে তখন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর প্রাণ ভরা দৃশ্য মনে হবে এই হাসিটুকু। 
ডা: জ্যোৎ¯œা মাহবুব খান
মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ।

No comments :

Post a Comment