আসসালামু আলাইকুম

SSC পরিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে পরিক্ষা দিন এর জন্য আমি দোয়া করছি। সেই সাথে আমার ব্লগে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

Feb 10, 2015

ভালোবাসা একটি মানসিক রোগ!

ভালোবাসা একটি মানসিক রোগ!

মানব মনে ভালোবাসার মন্ত্র বীজ সৃষ্টির ধর্ম অনুসারেই বিদ্যামান। কেননা আল্লাহ তায়ালা ভালো বেসেই মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষকে তার সৃষ্টির সেরা প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাই মানুষের মনে ভালোবাসার প্রবৃত্তি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সৃষ্টি রহস্যেরই অন্তর্গত।
ভালোবাসা দুই প্রকার। প্রথমত, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ অর্থ্যাৎ মানুষের প্রতি মানুষের সৌহার্দপূর্ণ মনোভাব ও স্রষ্টার সৃষ্টির প্রতি প্রসন্ন ধারণা। পুরুষের প্রতি পুরুষের, নারীর প্রতি নারীর এবং পুরুষের প্রতি নারীর, নারীর প্রতি পুরুষের প্রসন্ন ধারণা হচ্ছে ভালোবাসা, ভালোজানা। এসব ভালোবাসা মহান আল্লাহর সৃষ্টি জগতের সৃষ্টি তত্ত্বের অন্তর্গত। দ্বিতীয় ভালোবাসা হচ্ছে নারীর প্রতি পুরুষের এবং পুরুষের প্রতি নারীর অসামাজিক, অনৈতিক জৈবিক ভালোবাসা। যার মধ্যে রয়েছে অবৈধ কামনা-বাসনা। এই দ্বিতীয় স্তরের ভালোবাসাটাই হচ্ছে একটি মানসিক রোগ।
এই মানসিক রোগটি যখন ব্যক্তির মধ্যে বাসা বাঁধে তখন ভালোবাসা বিষয়টি ব্যক্তির নীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। ব্যক্তির মনে এই অবৈধ ভালোবাসার নীতি সূত্র ব্যক্তির মধ্যে অনুপ্রবেশ করে ব্যক্তির প্রথম জীবনে। পরবর্তী জীবনে ব্যক্তি শুধু ওই নীতির প্রণয়ন ঘটায়। এই জৈবিক ভালোবাসার নিয়মটি জন্ডিস রোগের সূত্রে গাথা। মানুষের শরীরে জন্ডিস বি. ভাইরাস অনুপ্রবেশ করলে প্রথমে তা সুপ্তিমগ্ন থাকে, ইংরেজিতে এই সময়কে ইনকিউবিশন প্রিয়ড বলা হয়। জীবাণুটি দেহের মাঝে সুপ্তিমগ্ন থাকাকালে, প্রতিকূল কোন প্রাকার অনিয়ম-নীতির প্রশ্রয় ঘটলে রোগের আকার ধারণ করে। এই সৃষ্টি রোগের নাম জন্ডিস। এ রোগ একবার হলে, পুনরায় হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। এ রোগ থেকে ব্যক্তির পরিত্রাণ পাওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার।
ভালোবাসও এমনি একটি কঠিন মানসিক রোগ। এ রোগের যে রোগী সে ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্লাবন ঘটায়। সে প্লাবনের বিপক্ষে সবাই ভেসে যায়, পাড়ি জমায় শুধু, রোগী নিজেই। এ রোগের ধর্ম হচ্ছে পুনরুজ্জীবিত হওয়া। রোগী যখন একবার ভালোবাসার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়, তখন তার এই প্রবৃত্তি সময় সাপেক্ষে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, ভুলে যায় সে তখন পূর্বের ভালোবাসার পাড়ি জমানোর কথা ও ব্যক্তিকে।
মানুষের মন যেমন বিচিত্র তেমনি এই বিচিত্র মনের পরিধী গড়ে ৭ সেকেন্ড। তাই মানবমনের রহস্য, রহস্যই থেকে যায়। যে মন একবার পৃথিবীবাসীর বিপক্ষে যুদ্ধ করে পারি জমায় যাকে নিয়ে, সেই মন আবার তাকে ফেলে নতুনের সন্ধান লাভে পুনরায় বিপ্লব ঘটায়। এটাই ভালোবাসার মানসিক রোগীর নীতি ধর্ম। মানুসিক রোগীর ধর্ম আর জন্ডিস রোগের ধর্ম অভিন্ন। এই অভিন্ন লক্ষণের দুটি রোগ আজ সমাজ দেহে প্রকট আকার ধারণ করেছে। একটির প্রভাবে শরীর ধ্বংস হয়ে মৃত্যুর পথে ধাবিত হয়। অন্যটির কারণে মানসিক রোগী হয়ে দাম্পত্য জীবন অশান্তির দাবানলে প্রজ্বলিত হচ্ছে। জন্ডিসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্ব যেমন আতঙ্কিত ভালোবাসার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ বিশ্ববাসী আজ তেমনি পৈশাচিকতার অতল গহব্বরে নিমজ্জিত। 
বিশ্ববাসী মনুষ্যত্ব পূর্ণ জীবনাচরণকে জলাঞ্জলি দিয়ে  আপাত মধুর ইন্দ্রীয় তৃপ্তির মোহে ভোগবাদী জীবনকে গ্রহণ করেছে। সে ভোগের সামাজিক নিয়ম-রীতির সূত্র হিসেবে গ্রহণ করেছে লিভটুগেদার, ফ্রি সেক্স। শুধু তাই না, সে সমাজে অবাধ যৌনাচার সামাজিক স্বীকৃতি পেয়েছে। সে সমাজে আবার সমকামীর মতো জঘন্য ঘৃণিত পৈশাচিক আইনও স্থান পেয়েছে। নগ্নতা বেহায়াপনার প্রতিযোগিতামূলক সামাজিক ব্যবস্থা আজ পাশ্চাত্য বিশ্বকে গ্রাস করে ফেলেছে। এর জন্য      আন্তর্জাতিক পর্য়ায়ে তার মূল্যায়নের ব্যবস্থাও করেছে, সভ্যতার নিদর্শন হিসেবে বিশ্বভালোবাসা দিবসে রাষ্ট্রীয় উদযাপনের মাধ্যমে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৬৯ খ্রিস্টাব্দে রোমের ধর্মযাজক ভ্যালেন রাষ্ট্রীয় ঘোষণার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সমাজের মধ্যে অবিবাহিত তরুণ-তরুণীর মধ্যে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের গোপনে বিয়ে দেওয়ার অপরাধে ভ্যালেনকে ফাঁসিতে মৃত্যুদ- প্রদান করলে, ঐ সময়ে দেশের তরুণ-তরুণীরা ভালোবাসার দিন হিসেবে ভ্যালেনকে স্মরণ করে। পরবর্তিতে ফুল দিয়ে দিনটি উদযাপন করে। দীর্ঘসময় বন্ধ অবস্থায় অতিবাহিত হওয়ার পর ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে রাজা কালেন্সির রাষ্ট্রীয় ঘোষণার মাধ্যমে দিনটি বর্তমানে ১৪ ফেব্রুয়ারির মতো ঘৃণিত বিশ্ব ভালোবাসা দিবস নামে উদযাপন করা হচ্ছে।
ষোড়শ শতাব্দিতে গ্রীসের রাজধানী এথেন্সে অবৈধ ভালোবাসার উন্মেষ ঘটে, ভালোবাসার দেবতা নামে খ্যাত কিউপিডের যৌন লালসা নিবৃত্তির মাধ্যমে। ভালোবাসায় বিশ্বাসী ব্যক্তির মন সর্বদাই সন্দেহ প্রবণ থাকে। এ সন্দেহের দাবানলে প্রজ্বলিত হয় তার মধূময় দাম্পত্য জীবন। কেও কারো প্রতি বিশ্বাস রাখে না। পরিতাপের বিষয় এই যে বর্তমান সমাজের প্রগতি পন্থি সমাজবাসীর মধ্যে রুচি বোধের বালাই নেই। মনুষ্যত্ব বোধ বিদায়ের সাথে সাথে রুচিবোধেরও চরম পরাজয় ঘটেছে- যা পশুত্বকেও হার মানায়।  
মানুষের সবচেয়ে বড় মূলধন হচ্ছে তার চরিত্র। চারিত্রিক সততার সাথে পবিত্রতার শর্তেই ব্যক্তি হয় চরিত্রবান। বর্তমান সামাজে সচ্চরিত্র আর দুশ্চরিত্র এ দুয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। মানুষ ভেদাভেদ পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছে। এ কারণেই আজকের মানুষ অহরহনীতি গর্হিত কাজ নিসঙ্কচে করে যাচ্ছে। সৃষ্টির সমস্ত প্রাণীর মধ্যে শুধু মাত্র মানুষকেই আল্লাহপাক বিবেক বোধ শক্তি দান করেছেন। চরিত্রবান লোকের জন্যই সমাজে শান্তি ও সৌন্দর্য বজায় থাকে। মানবজীবনে চলা ফেরায়, কথা বার্তায়, কাজে কর্মে, আচার-আচরণে এবং চিন্তাধারায় যে মহৎভাব পরিলক্ষিত হয় তাকেই বলা হয় চরিত্র। যার আচার-আচরণে আত্মকেন্দ্রিক ও ভোগবাদ প্রাধান্য পায় তাকে বলা হয় চরিত্র হীন। আচরণ বিধির প্রতি যাদের শ্রদ্ধা বোধ নেই তারা নিজেদের পশুসত্ত্বা থেকে উত্তীর্ণ হয়ে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে ব্যর্থ হয়।
চরিত্র সাধনার ধন। এটি সাধনার মাধ্যমে যেমন অর্জন করতে হয় তেমনই রক্ষার জন্যও মনুষ্যত্বের ধারক-বাহক হতে হয়। পাপের অগণিত প্রলোভন মানুষকে বিপথে চালিত করতে সচেষ্ট। চরিত্রকে সুমহান করে গড়ে তুলতে হলে সাধনার বিকল্প নেই। সাধনার ফলে মানুষের মধ্যে মহৎ গুণাবলী অর্জিত হয় এবং তা জীবনকে পবিত্র সুন্দর কোরে তোলে। সৎসঙ্গ, সংযমশীলতা, ন্যায়নিষ্ঠ, ন্যায়পরায়নতা, ধর্মীয় গ্রন্থপাঠ, জ্ঞানীর উপদেশ প্রভৃতি সাধনার পথে সহায়ক।
চরিত্র সাধনার জন্য ন্যায়-নিষ্ঠ নিয়মাবলী বিশ্ব সমাজ হতে উধাও হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে সেখানে স্থান পেয়েছে পাপ পঙকিলতা পূর্ণ জীবনাচরণ। সে আচরণের চরম নিদর্শন নারী পুরুষের অবাধ গমন, অবাধ বিচরণ, যার থেকে সৃষ্টি হয়েছে অবাধ যৌন মিলন, যাকে স্বীকৃতি দিয়ে বৈধ করে নিয়েছে পাশ্চাত্য বিশ্ব। বর্তমান বিশ্ববাসীর মগজ হতে বিবেক যেন পালিয়ে গেছে। অবৈধ রুজি রোজগার ও অনৈতিক কাজের মধ্যে থাকতে থাকতে বিবেকের চরম পরাজয় ঘটেছে। তাই বিবেক বর্জিত কাজ করতে মানুষ আজ দ্বিধাবোধ করে না। লজ্জা চরিত্রের ভূষণ। লজ্জা ঈমানের অংশ। লজ্জা মানুষকে গর্হীত ও অশালীন কাজ হতে দূরে রাখে। বর্তমান বিশ্ব তো নির্লজ্জতার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। বিশ্ববাসীর সভ্যতার পরিচয় ন্যক্কারজনক। সর্বত্রই নীতি জ্ঞান বর্জিত ঘৃণিত সমাজ ব্যবস্থা। নারী-পুরুষের অবৈধ ভালোবাসার উষ্ণ প্রসবনে সৃষ্টি হয়েছে যে পরিবেশ, এ পরিবেশের মধ্যে মানুষের পক্ষে মনুষ্যত্ব বজায় রেখে চলা সম্ভবপর নয়। মনুষ্যত্বের যেখানে পরাজয় হয় পশুত্বের সেখানে বিজয় ঘটে। প্রগতির ধারায় বর্তমান বিশ্বে যে বিজয় ঘটেছে, এ বিজয়ে আর যাই হোক মানুষের পক্ষে মনুষ্যত্বপূর্ণজীবন গঠন ও জীবন ধারণ সম্ভব হচ্ছে না। আজকের বিশ্বের নারী-পুরুষের ভালোবাসার নামে আপত্তিকর ও অনৈতিক যৌনাচার জাহেলি যুগের নগ্নতাকেউ হার মানে। সমাজ দেহে অবৈধ ভালোবাসার মন-মানসিকতা ভাইরাসের মত অনুপ্রবেশ করেছে। পাশ্চত্য সভ্যতার বেহায়াপনা যেভাবে সমাজে প্রবেশ করেছে, তাতে জাতির আত্মরক্ষা করা কঠিন। যে জাতি তার সংস্কৃতি হারিয়ে ফেলে, সে জাতি স্বধীনতার স্বাদ পায় না। আমাদের সাহিত্য সংস্কৃতিতে, বিজাতীয় সভ্যতার কৃষ্টি প্রবশের ফলে সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের ধস নেমেছে। আজ জাতীয় সংস্কৃতির পরিচয় দিতে গেলে আমাদের লজ্জাই পেতে হয়। মুসলিম অধ্যুষিত এদেশে মনুষ্যত্বপূর্ণ শিক্ষা সংস্কৃতির বিকৃতি ঘটেছে পাশ্চাত্য ভোগপণ্য সভ্যতার কারণেই। নারী মর্যাদাপূর্ণ সম্পদের পরিবর্তে আজ ভোগ্যপণ্যে পরিণত হয়েছে। চলচ্চিত্র, রাজনৈতি মহল, এক শ্রেণি ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতি-প্রিয় ব্যবসায়ী-লেখক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে। জাতিকে যারা এগ্রিয়ে নেবে, তাদের অন্তরটিই তো পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির সূত্রে ঘুণে ধরা। 
মানুষের মনজগৎ আজ নীতিবর্জিত। মানুষের মন আজ অপবিত্রতায় মোহাচ্ছন্ন। সর্বদাই বাহ্যিক আকর্ষণে মগ্ন। বাংলার সে প্রবাদ বাক্য আজ কোথায়! যাতের মেয়ে কালোও ভালো, নদীর জল ঘোলাও ভালো। জাতের একটি বৈশিষ্ট্য আছে, সে স্থায়ী। অজাতের বৈশিষ্ট্য আকর্ষণীয় তবে অস্থায়ী। বর্তমান সমাজে ভালোবাসার নীতি সূত্রটি আকর্ষণীয় অস্থায়ীর প্রতিধাবিত। জাতের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে মনুষ্যত্বের ধারক-বাহক। অর্থ্যাৎ মনুষ্যত্বের গুণাবলী যার মধ্যে বিদ্যমান। নারীররূপ স্থায়ী নয় তার নৈতিক গুণাবলী স্থায়ী। নারীর দেহ হতে রূপ-যৌবন বিদায় নিলেও তার গুণাবলী বিদায় নেয় না। আমৃত্যুকাল পর্যন্ত তা বিদ্যামান থাকে। নারী প্রকৃত মর্যাদাও তখন পায়।
বর্তমানে সমাজের বিনোদনের প্রধান উপকরণ হচ্ছে নারী। নারী আজ সেরা ভোগ্যপণ্যে পরিণত হয়েছে। অথচ সমাজে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে নারী। পুরুষ সম্পদের অধিকারী হয় তখন, যখন সে কার্যক্ষম হয়। কিন্তু নারী জন্মনো মাত্রই সম্পদ। তবে এই সম্পদের পূর্ণ অধিকারী হয় তখন, যখন নারী মাতৃত্বের পরিচয় দিতে পারে। নারীর সন্তানের পবিত্রতা রক্ষার জন্যই তাকে সমাজের পঙ্কিকলতাপূর্ণ পরিবেশ থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। নারীর একটি স্বভাব সে বাইরের চাকচিক্যময়তার প্রতিধাবিত। এটা তার নারীত্বের জন্য বড়ই ক্ষতি ও অবমাননা কর। সুন্দরী নারী পরিবারের, সমাজের ও জাতির সম্পদ। নারীর রূপ-সৌন্দর্য তার অহঙ্কার। তবে এ অহঙ্কার হবে অহিংসুক। নারীর সৌন্দর্য তার অপার্থিব সম্পদ। এই মহামূল্যবান অপার্থিব সম্পদের পবিত্রতা রক্ষা করার দায়িত্ব নারীর নিজেরই। সৌন্দর্যকে ঘিরে অনেক গুণাবলীর সমাবেশ ঘটে থাকে নারীর মধ্যে। তা জলাঞ্জলী দিলে তার নারীত্বেরই সর্বনাশ হয়। এই গুণাবলী যে নারীর মধ্যে যতো বেশি, সেই নারীই দাম্পত্য জীবনে ততো সুখী।
আবেগ জীবনের সকল ক্ষেত্রেই শত্রু, মিত্র শুধু এক জায়গায়। আবেগ জীবনের সকল ক্ষেত্রেই পরাজয়বরণ করে, জয়ী হয় শুধু ভালোবাসার ক্ষেত্রে। ভালোবাসার দুর্নিবার গতিতে যখন সাফল্য আসে, পাওয়ার আকাক্সক্ষা যখন মিটে যায় তখনি শুরু হয় অবমূল্যায়নের নিদারুণ যন্ত্রণা। এই অবমূল্যায়নটা ভালোবাসার দাম্পত্য জীবনেই বেশি ঘটে থাকে।
বিনোদন জগতে ভালোবাসার উদ্বুদ্ধ শক্তির সংগ্রামই শুধু দেখানো হয়, জীবনটা দেখান হয় না। ভালোবাসার দাম্পত্য জীবনের পরিণতি কি, কতভাগ জীবন সেখানে সুখী তার চিত্র বিনোদন জগতে পাওয়া যায় না, যায় শুধু শুরুটা। জীবন শুরুতেই শেষ। বাকি জীবনের পরিণতি কত ভাগ সুখ-সমৃদ্ধ তার পরিচয় মেলে না। লাইলি-মজনু, শিরি-ফরহাদ পড়লে, বুঝতে পারা যায় ভালোবাসার পরিণতি কোথায়। জাগতিক প্রেম প্রণয় সেখানে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। সমাজের অনুশাসনকে সেখানে বড় করে দেখানো হয়েছে। সর্বোপরি অবৈধ ভালোবাসার গলায় ছুরি দিয়ে নিষ্কাম প্রেমের অর্থ্যাৎ পবিত্র ভালোবাসার বিজয়ে ঘোষিত হয়েছে।
বর্তমান প্রজন্মের কবি সাহিত্যিকদের অন্তরে যেমন পাশ্চাত্যনীতি প্রবেশ ঘটেছে, তেমনি তাদের লিখিনীতেও তার প্রতিফলন ঘটেছে। দেশে আদর্শবান নাগরিক গঠন করতে হলে আদর্শবান পাঠকের প্রয়োজন। আদর্শবান পাঠক ছাড়া একটি শিক্ষিত জাতি গঠন করা সম্ভব নয়। আদর্শবান পাঠকের হাতে প্রয়োজন আদর্শ বই। আদর্শপূর্ণ বই রচনা করতে হলে প্রয়োজন আদর্শবান লেখক। লেখক সম্প্রদায় তাদের ব্যক্তি নীতিরই বহিপ্রকাশ লিখনীতে ঘটিয়ে থাকে। কবি, সাহিত্যিক, লেখক ও প-িতগণ জাতির সমাজ-সংস্কারক। সুতরাং মানুষ্যত্বপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা গড়তে হলে শিক্ষার বিকল্প নেই। তাই লেখক সম্প্রদায়কে নীতি সমৃদ্ধ সাহিত্য সৃষ্টির প্রয়াসী হতে হবে। কবির সৃষ্টি অমর। সাহিত্যের মধ্যে এই অমৃতের সন্ধান যখন পাঠক পায়, তখনই সাজের বুকে মনুষ্যত্বপূর্ণ জীবনাদর্শেন প্রসার ঘটে।
উন্নত হৃদয়, সত্যবাদী মন ও ন্যায়ের প্রতি শ্রোদ্ধাবোধ মানুষ অশিক্ষিত ও স্বল্প শিক্ষিত ব্যক্তির মধ্যে পাওয়া যায় না। জাতিকে বড় করতে হলে জ্ঞান-সেবার কাজে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সাহিত্যের প্রভাবে সমাজে ন্যায়-নীতি সমৃদ্ধবান ব্যক্তির জন্ম হয়। আজ সমাজ হতে অবৈধ ভালোবাসার উচ্ছেদের জন্য আদর্শবান লেখক সম্প্রদায়কে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। জাতিকে রক্ষা করতে আজ লেখক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা অতি জরুরি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

No comments :

Post a Comment